১ম বর্ষ,৫ম সংখ্যা,১৫ ই জুন ,২০১৪। ১লা আষাঢ়,১৪২১

১ম বর্ষ,৫ম সংখ্যা,১৫ ই জুন ,২০১৪। ১লা আষাঢ়,১৪২১

Saturday, March 15, 2014

মানবতার অবক্ষয়

মানবতার অবক্ষয়
আহাম্মদ কবীর (হিমেল)

আমিতো দেখেছি
ডাস্টবিনের খাবার কুড়িয়ে খেয়ে
অভুক্ত টোকাইয়ের মুখে তৃপ্তির হাসি !তবে তুমি কেন এতোটা উচ্চবিলাসী ?
আমিতো দেখেছি
জীর্ণ বসনে পল্লী বধূ হাড় ভাঙ্গা খাটুনিতে
সংসারের প্রতি কতোটা স্নেহশীল !তবে তুমি কেন এতোটা আখাঙ্খা প্রেয়সী ?
আমিতো দেখেছি
দুঃখিনী জননী যক্ষেরধন হারিয়ে
কতোটা কাঙ্গাল তার পরেও আশাবাদী !তবে তুমি কেন এতোটা নৈরাশ্য পিপাসী ?
আমিতো দেখেছি
প্রেমিক যুগলের চোখে মাথা গোঁজার
ঠাই পাওয়ার অন্তরের ব্যাকুলতা !তবে তুমি কেন এতোটা সংসার বৈরাগী ?
সামযে চলার সময় আছে ঢের
সামযে চলো তুমি 
ইতিহাসের পাতায় নয় মানুষের অন্তরে থেকে
রোধ করো মানবতার এই অবক্ষয় 

দু'জনে একাকার

দু'জনে একাকার
____মিশকাত উজ্জ্বল____

হই যদি তুমি আমি দুজনেই একা
কেন তবে অহেতুক দূরে দূরে থাকা?
এসো দু'জনে বিরহময় একাকিত্বকে,
নৈশব্দময় নিঃসঙ্গতাকে জানিয়ে আড়ি
প্রণয়ের যুগল নদী_ একসাথে দেব পাড়ি

যেভাবে ভ্রমর ছুটে যায় ফুলের ঘ্রাণে
নদীও নিমন্ত্রিত অতিথি হয় সাগরের টানে
যেভাবে ঝিনুকে মুক্তা লুকিয়ে থাকে,
চাঁদের বুকে জোছনা
যেভাবে দুটি নদীর মিলনে হয় মোহনা_

সেভাবে আমরাও একাকার হব
এসো দু'জনা...

নির্বাক স্বাধীনতা

নির্বাক স্বাধীনতা
আহাম্মদ কবীর (হিমেল)

কাদানু গ্যাসে কাঁদো কাঁদো চোখে
রবার বুলেটের আঘাতে রক্তমাখা বুকে,
নির্বাক স্বাধীনতার জ্বালা ধরা মুখে
কতো আর থাকতে পারি সুখে ?

পেট্রোল বোমার দাউ দাউ আগুনে
আচমকা ককটেলের বিস্ফোরণে,
আতঙ্কগ্রস্থের বিষাক্ত সংক্রামণে
মুক্ত বায়ু পাবো কি বসে থেকে লনে ?

এ কোন উৎসবে মেতেছে দেশ, রক্তের হলি খেলায়
চলে যেতে হবে কত তাজা প্রাণ কেন অবেলায় ?
তোমার আমার চাওয়া পাওয়ার অপূর্ণ খাতায়
ছোপ ছোপ রক্তের দাগ প্রতিটি পাতায়

নির্বাক হে স্বাধীনতা এড়াতে পারকি তোমার দায়
ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মদানের জাতী আজ পুর্নাঙ্গ মুক্তি চায়

অনন্তকাল

             অনন্তকাল
----
নুরুল আমিন শিশির

তুমি ভাবছো হয়তো,
তোমাকে পেতে আমার অনন্তকাল
কেটে যাবে।
তুমি দেখছো হয়তো,
অদূরে সীমানায় দাঁড়িয়ে
আমার বর্তমান কে।
তুমি খুঁজছো হয়তো,
আমার মাঝে তোমার উপলদ্ধিতাকে।
তুমি শুনছো হয়তো,
আমার মনের গভীরতা কে।
তুমি আর আমি কে কাকে চিনি?
অথচ তুমি আমি দু'জনাতে
অসীম সুখ খুজি-
আমার অতৃপ্ত কথাগুলো
যতবার তোমায় বলতে চাই,
ততবারই অস্বচ্ছ এক দেয়াল
সামনে এসে দাঁড়ায়।
হৃদয়ের শূনতা কেন যে,
এতো যাতনা দেয়?
ভালোবাসার কথাটি
বলতে পারি না তাই
কেউ কাউকে।
তোমাকে ভালোবাসতে যাবো ঠিক
তখনি তাড়া করে ভয় বিশ্বাসের
মৃত্যু যদি আতুড়ে ঘরে হয়ে যায়
তবে মন দিয়েও কিছু হাবার নয়

শতাব্দির মজেজা

শতাব্দির মজেজা
// শাহজাহান পারভেজ রনি//

সবাই ঝুলছি
ঝুলন্ত বাদুড় গুলোর মতোই;
এই একবিংশ শতাব্দির প্রাক্কলিত ডালে ঝুলবারান্দা হয়ে
আত্বাহুতির জন্য ঝুলছে প্রান্তিক গন মানুষের দল
অফিস আদালতে মানুষ গুলো দিনের পর
দিন ঝুলে থাকে সিদ্ধান্তহীনতায়
রাষ্ট্রীয় মতবাদ ঝুলে যায়
আঁধারে পথচলা বাদুড়ের মতোই
ইলেকট্রিক খাম্বায় টাঙ্গানো সুক্ষ সরু তারে;
ঝুল মানুষেরা ঝুলে ঝুলে দ্যাখে
অচলায়নের দুনিয়া
দেশ সমাজ
এবং ঝুলতে থাকা মধ্যবিত্তের পরিবার
হাড়-জীর্ন মানুষগুলোর চাহিদা অভাব অভিযোগ
আবেগ ভালবাসাগুলোও ঝুলতে থাকে
পেটের প্রশ্নে।
দিনের প্রশবনে রাত রাতের প্রশ্নে দিনের উত্তর
তথাকথিত মানবতা,
শহর সভ্যতাও একদিন ঝুলে যায়
গ্রামের গর্তে লুকিয়ে থাকা ঘুগুরের দল
শহরমুখী মানুষের চোরাস্রোত ঝুলে যায়
বেশ্যাবৃত্তির ভয়-ডরে।
মানুষের বাগানে ফলিত ফসল
সম্মন্ধ রাগ রোগ কিংবা কমরেডের
আহবান একবিংশ শতাব্দির দাবানলে
ঝুলে যায় প্রবল সতর্কতায়

ঝুলন্ত রাষ্ট্রব্যাবস্থায় আমরা সবাই এখন বাদুড়!

আর একটি দিন

আর একটি দিন
কথক মিত্র

আকাশ মেঘ চূঁড়ায় আমি নিশি দেখেছি,
স্রোতস্বিনীর ত্রিতালে সুর তুলেছে
অর্ধেক বুড়ী হওয়া ঘুমহারা চাঁদ নিঃপ্রান,
অভিনীত অভিমান ।আমায় ঘরছাড়া
করলো ওরা, জানালাটা খোলা রেখে আমি ছুটছি মুক্ত আলোতে
প্রাঙ্গন মুহুরীর চিলেকোঠর চাঁদরে
আমি ঢেকে রেখেছি নিজেকে ।
ঠুকরে পরা ঈর্ষনীয় চাঁদের আলো
দু’হাতে ধরি,অবলীলায় নৃত্য করে ওরা
ঘ্রান নিই...সুঘ্রান..বিষ্ময়  ।
মৃত্যুর আগে এটাই বুঝি শেষ ঘ্রান
আমার চোখে জড়তা এসে যায়, ঘুম ঘুম তন্ময়ের আড়ষ্টতা
শরীরে ঝাকি দেয় এক অচেনা অনুভূতি,
এ বুঝি বেঁচে থাকার আনন্দ, আকাঙ্খা জাগে
আর একটু....আর একটু বেশী বায়ু যদি পারতাম নিতে
হৃদপিন্ডের বায়ুকুঠুরীতে......

হয়ত আর একটি দিন...আর একটি দিন......

লাসভেগাসে একদিন

লাসভেগাসে একদিন 
// ইকবাল রাশেদীন 

ছুঁড়ে মেরেছি মুদ্রাটি শূন্যে
হেড হলে তুমি, টেইল হলে না ।

বনবন করে লাটিমের মতো ঘুরছে ধাতব মুদ্রা
সেই সাথে ঘুরছে 
গ্রহ, নক্ষত্র, আকাশ, বাতাস- 
ঘুরছে তাবৎ পৃথিবী আমার ।

কোত্থেকে এক চতুর চিল এসে তখন
ছোঁ মেরে নিয়ে গেল
ভাগ্য নির্ধারণের ঘূর্ণায়মান জুয়াড়ী কপাল ।

তুমি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লে, আমিও;
কার দীর্ঘশ্বাসে কষ্ট বেশী ছিল

জানা হল না - আজও । 

বসন্ত

        বসন্ত  
      সামিন রহমান

হঠাৎ হঠাৎ কেমন সুবাতাস ভেসে আসে,
মায়াবীর মত কেমন মন্ত্র পড়ে।
ঘুম ঝরে,
ঘুম ভারে বুজেঁ আসে আমার দু চোখ।
তখন আমার আনন্দলোক
বুঝি আমারে পায়।
বিমোহিত করে সুরে মায়ায়,
আলোর যেন দেখা পাই নিজ প্রাণে।
তাইত বসন্ত আমারে এতো টানে,
এতটা গান শোনায়, এতটা ভালবাসে।

বসন্তরে আমি দেখেছি, সে যে আমার কাছে আসে,
রঙ্গিন সাজে সাজে, খেলা করে, রঙ্গিন করে।
আমার তরে তার নির্মল হাসি কেমন আপন।
আমার ভীতি, আমার কাঁপন,
কেমন হাওয়ায় মিলায় যায়, আমি গাইতে পারি, ভাসতে পারি।

আর স্বপ্নচারী
হৃদয় আমার হাসে, আনন্দ করে, খেলা করে, ইচ্ছেমতন।
ক্ষণে ক্ষণে অনুভবে বুঝি, বারেবার তার হৃদয় ছোঁয়া এক অতি আপন
গান, আমার প্রানমেঘে কেমন রৌদ্র হানে।
তাইত বসন্ত আমারে এতো টানে,

এতটা গান শোনায়, এতটা ভালবাসে।

বাউন্ডুলে

বাউন্ডুলে
-মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জেরী

বালুঝড় থেমে গেলে,
সূর্যি মামাটি উঠলে
তুমি আসবে, তুমি আসবে বলেছিলে।

আলেয়ার আলো হয়ে ভর দুপুরে
তবু তুমি আসলে না,
ভাসলে না রুদ্র-রুক্ষ মরুভূমিতে।

আর কত ক্ষণ, আর কত দিন।

আকাশের তারারা সব নিভে গেলে,
বাতাসের ঝাপটা থেমে গেলে,
তুমি আসবে, তুমি আসবে বলেছিলে।

জোনাকি হয়ে এই গভীর নিশীথে
তবু তুমি আসলে না,
জ্বাললে না আলো ঝাউয়ের শাখায়।

আর কত ক্ষণ, আর কত নিশীথ।

তোমার পায়ের চিহ্ন পড়ে আছে
লাল দিঘীর তীরে,
শুধু তুমি ছাড়া
কত জন সে চিহ্ন মাড়ায়।

কাশবনে হয় তোমার ভূতুড়ে আবির্ভাব
তোমার হাসির লাশ
ঘোরে ফেরে চারপাশ,
সেই কাশবনে শুধু
এক বাউন্ডুলে ঘুরে বেড়ায় ।